সোমবার, ১২ মে ২০২৫, ০২:২৮ পূর্বাহ্ন

সর্বশেষ সংবাদঃ
অনলাইন ভিত্তিক গণমাধ্যম “৭১সংবাদ২৪.কম” এ প্রতিনিধি আহ্বান করা হয়েছে। আগ্রহীগণ জিবনবৃত্তান্ত পাঠাতে 71sangbad24.com@gmail.com -এ মেইল করুন
সংবাদ শিরোনামঃ
রংপুরে গৃহবধূ নির্যাতনে গর্ভপাত- মামলা তুলে নেয়ার হুমকি কুমিল্লায় র‌্যাবের অভিযানে মাদক সহ আটক ২ ফুলবাড়ীতে জমিজমার বিরোধ মারপিট আহত-১ ফুলবাড়ী থানার পুলিশ অভিযান চালিয়ে মাদক সহ আটক-১ নড়াইলে সেনাবাহিনীর অভিযানে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার ৩ পুঠিয়ায় রাজশাহী পূর্ব জেলা মজলিসে সুরা অধিবেশন পীরগঞ্জে আ’লীগ নিষিদ্ধের দাবিতে বিক্ষোভ ধুনটে অবৈধভাবে গাছ কর্তনের অভিযোগ ধুনটে কৃষক দলের কমিটি গঠন উপলক্ষে আলোচনা সভা নড়াইলে যুবকের মরদেহ উদ্ধার নড়াইলে দুই ইউপি চেয়ারম্যান সহ গ্রেপ্তার ৪ ধুনটে প্রাথমিক বিদ্যালয় গুলোতে মাল্টিমিডিয়া প্রজেক্টর বিতরণ ফুলবাড়ীতে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে রশিদপুর গ্রামবাসীর মানববন্ধন নড়াইলে তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে নিহত-১ চলমান মামলা সত্বেও মাছ লুট- সংঘবদ্ধ চক্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ নড়াইলে ডিবির অভিযান গাঁজাসহ গ্রেপ্তার-১ ফুলবাড়ীতে ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীর মাঝে বকনা গরু বিতরণ রংপুরে মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও হুমকিদাতাদের গ্রেপ্তার দাবি পীরগাছায় প্রভাব বিস্তার করে মসজিদে তালা বিআরটিএ বাড়তি টাকা আদায়ের সত্যতা পেয়েছে দুদক

মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের প্রেসক্রিপশন নিয়ে টানাহিঁচড়া- অতিষ্ঠ রোগী ও স্বজনরা

আরিফ শেখ- অনুসন্ধানী প্রতিবেদকঃ
দিনভর মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভদের দখলে থাকে রংপুরের তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স। সকাল থেকেই হাসপাতালের বিভিন্ন ওয়ার্ডে ও গেটের সামনে অবাধ বিচরণ করতে থাকেন।

কোনো নিয়ম না মেনেই যখন-তখন ঢুকে পড়ছে চিকিৎসকের কক্ষে। রোগীরা চিকিৎসকের কক্ষ থেকে বাইরে আসার সঙ্গে সঙ্গে তারা প্রেসক্রিপশন নিয়ে শুরু করেন টানাহিঁচড়া। এতে অতিষ্ঠ রোগী ও তাদের স্বজনরা। সিস্টারও তাদের কাছে নির্দ্বিধায় রোগীর ফাইল দিয়ে দেন।

সরেজমিনে হাসপাতাল চত্বরে গিয়ে দেখা যায়, মেডিকেল রিপ্রেজেন্টেটিভরা ডাক্তারের কক্ষগুলোর সামনে জটলা করে আছেন। রোগী বের হলেই হুমড়ি খেয়ে এসব রিপ্রেজেন্টেটিভরা রোগীর প্রেসক্রিপশন কেড়ে নিচ্ছেন ছবি তোলার জন্য।

ডাক্তারদের রুমেও দেখতে পাওয়া যায় বিভিন্ন কোম্পানির ওষুধের স্যাম্পল, দামী দামী কলম, সুগন্ধি টিস্যু সহ নানান পদের উপঢৌকন।

তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ডাক্তার দেখাতে গিয়েছিলেন ৫৫ বছরের আসাদুল ইসলাম । চেম্বার থেকে বের হওয়া মাত্রই তাকে ঘিরে ধরলেন পাঁচ থেকে ছয় জন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ (এমআর)। তার হাত থেকে প্রায় ছিনিয়ে নিয়ে গেলেন প্রেসক্রিপশন। চিকিৎসক তাকে কী কী ওষুধ লিখে দিলেন সেগুলো দেখতে থাকেন, ছবিও তুলে নেন কেউ কেউ। প্রায় দু-তিন মিনিট ধরে তাদের এই কাজ চলে। ওদিকে বৃদ্ধ আসাদুল কাহিল।

এই প্রতিবেদককে দেখে ক্ষুব্ধ হয়ে আসাদুল বলেন, আরে বাবা মোক যেমন করি ঘিরি ধরিল তাতে মুই প্রথমে মনে করছিনু পুলিশের লোক। ভয় পেয়া কনু, কি হইছে বাহে? মুই কি দোষ করনু? তখন ওমরা ‌মোক কিছু না কয়া হাতোত থাকি ডাক্তারের কাগজ কারি নিয়া ফটো তুলিল।

হাসপাতালে ১৩ মাসের সন্তানকে ভর্তি করিয়েছিলেন বুড়িরহাটের বুদারু মিয়া । তিনি বলেন, ২ দিন আমার বাচ্চা এখানে ভর্তি ছিল। প্রথম দিন সকালে হুট করে দুই রিপ্রেজেন্টেটিভ ঢুকে প্রেসক্রিপশন চাইল।

সেটা দিয়ে কী করবে জানতে চাইলে তারা বলেন, একটু দেখবেন। আমি দেয়ার আগেই তারা টেবিলে রাখা প্রেসক্রিপশন নিয়ে ছবি তুলতে থাকেন।

একটু কম খরচে চিকিৎসা করাতে হাড় ক্ষয় সমস্যা নিয়ে থানাপাড়া থেকে হাসপাতালে এসেছিল আম্বিয়া। কিন্তু ফার্মেসিতে গিয়ে দেখেন, প্রেসক্রিপশনে চিকিৎসক অনেক বেশি দামি সব ওষুধ লিখেছেন। শেষে শুধু একপাতা সরকারি গ্যাসের ট্যাবলেট নিয়েই বাড়ি ফেরেন।

ওষুধ কম্পানির এক বিক্রয় প্রতিনিধি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, কোম্পানি ভেদে তাদের প্রতিদিন ৫০-১০০ জন রোগীর প্রেসক্রিপশনের ছবি তোলার টার্গেট দেওয়া হয়। এই টার্গের পূরণ করতে না পারলে কম্পানি থেকে চাপ আসে।

এ জন্য ইচ্ছা-অনিচ্ছাতেও রোগীদের প্রেসক্রিপশনের ছবি তুলতে হয়। এতে রোগীরা বিরক্ত হয় কিনা- এমন প্রশ্ন করলে তিনি জানান, এ বিষয়ে তাদের করার কিছুই নেই। কারণ, ডাক্তাররা কম্পানির ওষুধ লিখছেন কিনা, সেটা দেখার জন্য কোম্পানি তাদের নিয়োগ দিয়েছে।

এ ছাড়া ডাক্তারদের নিয়মিত বিভিন্ন ধরনের গিফট, ভ্রমন ভাতা, নির্দিষ্ট পরিমাণে টাকা দেওয়ার মতো সুবিধা দেয়া হয়। এ জন্য ডাক্তাররা নির্দিষ্ট কম্পানির ওষুধ প্রেসক্রিপশনে লিখে থাকেন বলে জানান এই বিক্রয় প্রতিনিধি।

স্থানীয় মতিয়ার রহমান জানান, হাসপাতালে যেসব রোগী আসেন তাদের মধ্যে অনেক গুরুতর অসুস্থ রোগী থাকে। টেনশন থাকে। এমন পরিস্থিতিতে তারা কেন এমনভাবে বিব্রত করে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উচিত তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া। প্রতিদিনই হাসপাতালে তারা ভিড় জমায়। কেন যে এদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না, বুঝি না। হয়তো ডাক্তারদের সঙ্গে রিপ্রেজেন্টেটিভদের যোগাযোগ আছে সুবিধা নেয়ার।

এ বিষয়ে কয়েকজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলতে যোগাযোগ করলে তারা বক্তব্য দিতে অস্বীকৃতি জানান।

রোগীর ব্যবস্থাপত্র নিয়ে টানাহিঁচড়ার বিষয়ে তারাগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরকল্পনা কর্মকর্তা ডাঃ শাহীন সুলতানা বলেন, সরকারি হাসপাতাল চত্বরে এমন আচরণ তারা করতে পারে না। আমি আজকে সকালেই তাদেরকে নিষেধ করেছি।

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

সংবাদটি শেয়ার করুনঃ

©2019 copy right. All rights reserved 71sangbad24.com
Design & Developed BY Hostitbd.Com